লুৎফুল হাসান রানা, কলাপাড়া ॥ কুয়াকাটা পৌরএলাকা এবং লতাচাপলী ইউনিয়নের কৃষকসহ সাধারণ মানুষের কৃষিকাজে জলবদ্ধতার শঙ্কা কেটে যাবে। উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়নপ্রকল্পের অধীন কুয়াকাটাসহ লতাচাপলীর চারদিকে ঘেরা ৪৮নং পোল্ডারের অধীন স্লুইস সংযুক্ত ৩০ কিলোমিটার খাল পুন:খননের উদ্যোগ নেয়ায় এমন সুফল পাবেন। খালের দুইপাড়ের বসবাসকারী মানুষ মৎস্য আহরণের সুযোগ পাবেন। পরিকল্পিতভাবে কুয়াকাটার উন্নয়নে এমন কাজের সুফল পাবেন অন্তত অর্ধলক্ষ মানুষ। ৩০ মার্চ শুরু হয়েছে সাড়ে সাত কিমি অংশের খালের পুন:খননের কার্যক্রম। লতাচাপলী ইউনিয়নের আলীপুর থেকে শুরু হওয়া খালটি কুয়াকাটা পৌরএলাকায় গিয়ে শেষ হয়েছে। স্থানীরা এটিকে খাজুরা কিংবা ফাঁিসপাড়ার স্লুইসখালও বলছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমনের মধ্যেও থেমে নেই এই পুনঃখনন কাজ।
স্থানীয় ও সংশ্লিষ্টসুত্রে জানা গেছে, খালটির সাড়ে সাত কিমি পুন:খনন করার কাজ শুরু হয়েছে আলীপুর অংশের শুরু থেকে। বিশ^ব্যাংকের অর্থায়নে এক কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়বরাদ্দে সাত দশমিক ৪৬৫ কিমি দীর্ঘ এ খালটির পুন:খননের কথা রয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কঙ্গম ইন্টারন্যাশনাল কনস্ট্রাকশন (সিকো) খননের কাজটি করছে। নিয়ম রয়েছে খালটির তলদেশের মাথা অর্থাধ দুই দশমিক পাঁচ মিটার থেকে গোড়ার দিকে নয় দশমিক পাঁচ মিটার খনন করা হবে। টপ থাকবে নয় থেকে ১৫মিটার পর্যন্ত। গভীরতা থাকতে হবে এক থেকে দেড় মিটার পর্যন্ত। আগামি জুন মাসে খালটির এই সাড়ে সাত কি:মি: অংশ পুন:খননের কাজ শেষ হওয়ার টার্গেট রয়েছে।
উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়নপ্রকল্পের পরামর্শক মো: মজিবুর রহমান জানান, এ পোল্ডারে মোট ৩০ কি:মি: খাল পর্যায়ক্রমে পুন:খনন করা হবে। এই খালটির প্রায় দুই কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ যথাসময় শেষ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি আরো জানান, কয়েকদফা পরীক্ষা-সমীক্ষা চালানোর পরে যথাযথভাবে কাজটি করা হচ্ছে এবং এ খালটি পুন:খনন হলে ড্রেনেজ ব্যবস্থার সুষ্ঠু সমাধান হবে। তাছাড়া রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মৃতপ্রায় এধরনের বাকী খালগুলোকেও পুনরুজ্জীবিত করা হবে। পানির প্রবাহ চলমান থাকায় পর্যটন এলাকা আরো সৌন্দর্যবর্ধন হবে।
দুই পাড়ের একাধিক বাসীন্দা জানান, মূল খালটি আগে চিহ্নিত করে তারপর পুন:খনন করার দরকার ছিল। এখন বাড়তি খাস জমি দখল হয়ে যাবে। এ খননে নামকাওয়াস্তে মাটি বেকু মেশিনে তোলা হচ্ছে। দুই পাড় ছেচে দেয়া হচ্ছে। রাতের বেলা কাদা তুলে সকালে পানি তুলে দেয়া হয় যা বোঝার কোনোই উপায় নেই।
লতাচাপলী ইউপি চেয়ারম্যান আনছারউদ্দিন মোল্লা বলেন, খালটি আরও গভীর এবং প্রস্থ করে খনন করার দরকার ছিল। তা নাহলে পার্শ্ববর্তী খাস অংশ দখল হয়ে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনা আছে। খালটির স্লুইসের অংশের সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকা তার ইউনিয়নের মধ্যে পড়েছে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আব্দুল বারেক মোল্লা বলেন, খালটি খননে জলাবদ্ধতার সমস্যা কেটে যাবে। তবে তিনি জানান, দুই পাড়ের মাটি সংরক্ষণ করতে পারলে দুই পাড়ে দুইটি সড়ক করে দিলে মানুষের অনেক উপকার হতো।
Leave a Reply